প্রচন্ড মাথা ব্যথা শফিকের। কপালের দুপাশের দুটো রগ ক্ষণেক্ষণে তিরতির করে লাফিয়ে জানান দিচ্ছে ব্যাপারটা নিয়ে এইবার সিরিয়াসলি ভাবা দরকার.... চশমাটা না বদলালে এবার হচ্ছেই না!
চশমাটা নাহয় বদল করলো, কিন্তু মাথার ভিতরে যে টেনশনটা কাজ করছে সেটা কিভাবে বদল করবে?
.
এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই ফজরের আজান পড়লো। রেণুকা ঘুমিয়ে আছে, প্রশান্তির ঘুম। এলোমেলো চুল ছড়িয়ে আছে বালিশে, মুখে লেপটে আছে মায়াবী হাসি। মেয়েটাকে দেখলে মনেই হয় না আর কিছুদিন পরে মেয়েটা মারা যাবে। যথাসম্ভব কম শব্দ করে ওজু করলো শফিক যাতে রেণুকার এতোটুকু ডিস্টার্ব না হয়।
.
মোনাজাত গিয়ে চোখের জলে আল্লাহ্কে জিজ্ঞাসা করলো কেন এতো নাটক? কি দরকার ছিলো এতো নাটকের? ভালোই তো ছিলো ওরা। স্কুলটায় ক্লাস করিয়ে দুটো টিউশনি করে বিকেলের আগেই বাসায় ফিরতো। যা টাকা পেতো ভালো করেই চলে যেতো ওদের। দেরি করলে রেণুকা বলতো এতো টাকা তো আমার দরকার নেই, আমার তো দরকার তোমাকে, তোমার সময়। দু চারটে টাকার জন্য আমাকে সময় দিচ্ছো না, আমি মরে গেলে করবা কি তখন এতো টাকা দিয়ে? একটু সময় তো দাও, একটু পাত্তা তো দাও!
.
সেই রেণুকা আজ মারা যাচ্ছে। শফিক চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে সেই কবেই, টিউশনিগুলোও। জমানো টাকাগুলো দিয়ে প্রতিদিন সকালে একটি করে নীল অর্কিড কিনে আনে রেণুকার জন্য। প্রতিদিন দুপুরে বেশি করে পেয়াজ মরিচ দিয়ে ডিম ভর্তা আর ছোট মাছের চচ্চড়ি করে। কোন কোন দিন গরম বেগুন ঘি দিয়ে ভেজে দেয় তো কোন কোন দিন আবুলের হোটেলে গিয়ে রেণুকার প্রিয় গরুর ভুনা দিয়ে ভাত খেয়ে আসে ওরা। বিকেলে রেণুকাকে নিয়ে হাটতে বেরোয়, লেকের পাড়ে বসে বাদাম খায়। প্রতিদিন রাস্তার পাশের ওজন মাপার মেশিন দিয়ে একবার করে ওজন মাপে রেণুকার আর অজানা আশংকায় নিজেই কুঁকড়ে ওঠে। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার আগে বেলী ফুলের মালা হাতে পড়ায় দেয়। রাতে পাতলা খিচুড়ি আর ডিমভাজি করে দেয় রেণুকাকে। এভাবেই তো ভালো আছে, ভাবে আগে থেকেই কেনো এভাবে সময় কাটায়নি ওরা? রেণুকা তো ঠিকই বলেছিলো।
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ভাবে এইতো রেণুকার শেষরাত, সকালে উঠেই দেখবো ও মারা গেছে। আর ভাবতে পারে না শফিক।
.
ওদের ভাব ভালোবাসার সুবিশাল আকাশে যখন আবির রঙের ছোঁয়া এসে পড়লো ঠিক তখনই একজন চলে যাচ্ছে। আর সাতপাঁচ না ভেবে শফিক উঠে নামাজের বিছানা ভাজ করলো। এক গ্লাস পানি খেয়ে গতরাতের কথা ভাবলো। রেণুকা ওর কাছে একটা বাচ্চা চেয়েছিলো গতরাতে, ওর অনুনয় বিনয়ের কাছে শফিক মানা করতে পারেনি। অসুস্থ মেয়েটার জন্য নাস্তা তৈরি করলো। নাস্তা আর ওষুধ নিয়ে রেণুকার পাশে এসে বসলো। হাত ধরলো। নিষ্প্রাণ হাত, অসাড়। রেণুকা মারা গেছে।
চশমাটা নাহয় বদল করলো, কিন্তু মাথার ভিতরে যে টেনশনটা কাজ করছে সেটা কিভাবে বদল করবে?
.
এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই ফজরের আজান পড়লো। রেণুকা ঘুমিয়ে আছে, প্রশান্তির ঘুম। এলোমেলো চুল ছড়িয়ে আছে বালিশে, মুখে লেপটে আছে মায়াবী হাসি। মেয়েটাকে দেখলে মনেই হয় না আর কিছুদিন পরে মেয়েটা মারা যাবে। যথাসম্ভব কম শব্দ করে ওজু করলো শফিক যাতে রেণুকার এতোটুকু ডিস্টার্ব না হয়।
.
মোনাজাত গিয়ে চোখের জলে আল্লাহ্কে জিজ্ঞাসা করলো কেন এতো নাটক? কি দরকার ছিলো এতো নাটকের? ভালোই তো ছিলো ওরা। স্কুলটায় ক্লাস করিয়ে দুটো টিউশনি করে বিকেলের আগেই বাসায় ফিরতো। যা টাকা পেতো ভালো করেই চলে যেতো ওদের। দেরি করলে রেণুকা বলতো এতো টাকা তো আমার দরকার নেই, আমার তো দরকার তোমাকে, তোমার সময়। দু চারটে টাকার জন্য আমাকে সময় দিচ্ছো না, আমি মরে গেলে করবা কি তখন এতো টাকা দিয়ে? একটু সময় তো দাও, একটু পাত্তা তো দাও!
.
সেই রেণুকা আজ মারা যাচ্ছে। শফিক চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে সেই কবেই, টিউশনিগুলোও। জমানো টাকাগুলো দিয়ে প্রতিদিন সকালে একটি করে নীল অর্কিড কিনে আনে রেণুকার জন্য। প্রতিদিন দুপুরে বেশি করে পেয়াজ মরিচ দিয়ে ডিম ভর্তা আর ছোট মাছের চচ্চড়ি করে। কোন কোন দিন গরম বেগুন ঘি দিয়ে ভেজে দেয় তো কোন কোন দিন আবুলের হোটেলে গিয়ে রেণুকার প্রিয় গরুর ভুনা দিয়ে ভাত খেয়ে আসে ওরা। বিকেলে রেণুকাকে নিয়ে হাটতে বেরোয়, লেকের পাড়ে বসে বাদাম খায়। প্রতিদিন রাস্তার পাশের ওজন মাপার মেশিন দিয়ে একবার করে ওজন মাপে রেণুকার আর অজানা আশংকায় নিজেই কুঁকড়ে ওঠে। সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার আগে বেলী ফুলের মালা হাতে পড়ায় দেয়। রাতে পাতলা খিচুড়ি আর ডিমভাজি করে দেয় রেণুকাকে। এভাবেই তো ভালো আছে, ভাবে আগে থেকেই কেনো এভাবে সময় কাটায়নি ওরা? রেণুকা তো ঠিকই বলেছিলো।
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ভাবে এইতো রেণুকার শেষরাত, সকালে উঠেই দেখবো ও মারা গেছে। আর ভাবতে পারে না শফিক।
.
ওদের ভাব ভালোবাসার সুবিশাল আকাশে যখন আবির রঙের ছোঁয়া এসে পড়লো ঠিক তখনই একজন চলে যাচ্ছে। আর সাতপাঁচ না ভেবে শফিক উঠে নামাজের বিছানা ভাজ করলো। এক গ্লাস পানি খেয়ে গতরাতের কথা ভাবলো। রেণুকা ওর কাছে একটা বাচ্চা চেয়েছিলো গতরাতে, ওর অনুনয় বিনয়ের কাছে শফিক মানা করতে পারেনি। অসুস্থ মেয়েটার জন্য নাস্তা তৈরি করলো। নাস্তা আর ওষুধ নিয়ে রেণুকার পাশে এসে বসলো। হাত ধরলো। নিষ্প্রাণ হাত, অসাড়। রেণুকা মারা গেছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন